চিত্রনায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় উত্তরা থেকে প্রধান আসামি নাসিরসহ ৪ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা যায়, এসময় তাদের কাছ থেকে ইয়াবা, মদসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ জানায়, যেসব অবৈধ মাদক উদ্ধার করা হয়েছে সেগুলো জন্য আসামিদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র আরেকটি মামলা দায়ের করা হবে।
চিত্রনায়িকা পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলার প্রধান আসামি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তার বন্ধু অমিসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ ১৪ জুন (সোমবার) দুপুরে রাজধানীর উত্তরা-১ নম্বর সেক্টরের-১২ নম্বর রোডে নাসির উদ্দিনের বাসা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পরীমণি আজ দুপুর ১২টার দিকে সাভার থানায় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি) কাজী মাইনুল ইসলাম।
মামলায় নাসির উদ্দিন ও তার বন্ধু অমির নাম উল্লেখ করে আরও চারজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এর আগে সকালে রূপনগর থানার মাধ্যমে লিখিত অভিযোগ করেন পরীমণি।
ওসি বলেন, পরীমণি নিজে বাদী হয়ে মোট ছয়জনের নামে এ মামলা করেছেন। মামলা নম্বর-৩৮।
এর আগে গতকাল ১৩ জুন (রোববার) প্রথমে ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাসে অভিযোগ তোলার পর রাতে সাংবাদিকদের বনানীর বাসায় ডেকে ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরেন তিনি।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাসে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তুলে তিনি লেখেন, ‘বরাবর, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমি পরীমণি। এই দেশের একজন বাধ্যগত নাগরিক। আমার পেশা চলচ্চিত্র। আমি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমাকে রেপ এবং হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।’
এরপর রাতে সংবাদ সম্মেলনে পরী মনি জানান, চারদিন আগে উত্তর বোট ক্লাবে তাকে ধর্ষণের এবং হত্যার চেষ্টা করেছেন নাসির ইউ মাহমুদ নামক ওই ব্যক্তি। তিনি উত্তর বোট ক্লাবের একজন কর্মকর্তা বলে নিজেকে পরিচয় দেন। এসময় পরী মনির পরিচিত ফটোগ্রাফার জেমিকেও মারধর করা হয়।
তিনি জানান, চারদিন আগে তার ফটোগ্রাফার জেমির বন্ধু ব্যবসায়ী অমি এর আমন্ত্রনে উত্তরা বোট ক্লাবে যান তিনি। সেখানে পানীয় গ্রহণ করার পর থেকেই তার সাথে অশালীন আচরণ শুরু করেন নাসির
ইউ মাহমুদ, এবং তারপরে এক পর্যায়ে শুরু হয় মারধর।
পরী মনি জানান, তাকে ধর্ষণ চেষ্টা এবং হত্যার হুমকি দেয়া হয়, এবং এক পর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। সেই রাতে তার গায়ে নাসির ইউ মাহমুদ হাতও তুলেছেন বলে জানান তিনি। রাত আড়াইটার দিকে তিনি জ্ঞান ফিরে পেয়ে কিছুটা সুস্থ হয়ে বনানী থানায় অভিযোগ করতে যান। অভিযোগ করতে গেলেও তার অভিযোগ গ্রহণ করে তাকে অভিযোগের কপি দেয়া হয়নি বলে জানান তিনি
তিনি আরো জানান, “গত চারদিন ধরে আমি সাধারন মেয়ে হিসেবে দ্বারে দ্বারে বিচার চেয়েছি, কিন্তু পাইনি। তাই আজ সংবাদ সম্মেলন ডেকেছি। আমি সুইসাইড করার মতো মেয়ে নই, আমি সুইসাইড করতে চাই না। তারপরও যদি আমার মৃত্যু হয় তাহলে তার জন্য এসকল ব্যক্তিরাই দায়ী থাকবে।”