কক্সবাজার: উখিয়ার বালুখালীর ক্যাম্পের দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ মাদ্রাসায় ৬ শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার (২২ অক্টোবর) থেকে শনিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল ৩টা পর্যন্ত একাধিক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৬ জনকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১০
৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক (এসপি) শিহাব কায়সার খান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, হত্যার ঘটনায় নিহত আজিজুল হকের বাবা নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে ২৫ জনের নাম ও অজ্ঞাত আরো ২০০ থেকে ২৫০ জনের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় মামলা করেন। এ মামলার এজাহারনামীয় ৫ জন ও সন্দেহজনক ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩ জন সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। শিগগির বাকিদেরও আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মজিবুর রহমান, দিলদার মাবুদ ওরফে পারবেজ, মোহাম্মদ আইয়ুব, ফেরদৌস আমিন, আব্দুল মজিদ, মোহাম্মদ আমিন, মোহাম্মদ ইউনুস ওরফে ফয়েজ, জাফর আলম, মোহাম্মদ জাহিদ, মোহাম্মাদ আমিন। এর মধ্যে মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে উখিয়া থানায় আরেকটি মামলা করেন।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৬ জনকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১০
উল্লেখ্য, শুক্রবার (২২ অক্টোবর) ভোর সোয়া ৪টার দিকে উখিয়ার এফডিএমএন ক্যাম্প-১৮ এইচ-৫২ ব্লকের দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ মাদ্রাসায় মুখোশ পরা একদল দুর্বৃত্ত প্রবেশ করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এরপর গুলিবিদ্ধদের কুপিয়ে এবং জবাই করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। ধারালো অস্ত্রের কোপে নিহত বেশ কয়েকজনের হাতের আঙ্গুলসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
নিহতরা হলেন- ক্যাম্প-১২, ব্লক-জে ৫ এর বাসিন্দা ওই মাদরাসার শিক্ষক হাফেজ মো. ইদ্রিস, ক্যাম্প-৯ ব্লক-২৯ এর মৃত মুফতি হাবিবুল্লাহর ছেলে ইব্রাহিম হোসেন, ক্যাম্প-১৮ ব্লক-এইচ-৫২ এর স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষার্থী আজিজুল হক ও মো, আমিন। হাসপাতালে মৃতরা হলেন- ক্যাম্প-১৮, ব্লক-এফ-২২ এর মাদ্রাসা শিক্ষক নুর আলম ওরফে হালিম, এফডিএমএন ক্যাম্প-২৪ এর মাদরাসাশিক্ষক হামিদুল্লাহ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত স্বজনদের দাবি, মুহিবুল্লাহর হত্যাকারী কথিত আরসার (আল-ইয়াকিন নামেও পরিচিত) সন্ত্রাসীরাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৬ জনকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১০
রোহিঙ্গাদের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র দাবি করে, রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক সব মাদ্রাসা কথিত আরসা নিয়ন্ত্রণ নিতে চেষ্টা চালাচ্ছে। সেই লক্ষ্যে প্রতিটি মাদ্রাসা পরিচালনায় দুইজন আরসা সদস্যকে কমিটিতে রাখার প্রস্তাব দেয় তারা (আরসা নেতারা)। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা তাতে রাজি হয়নি। যদিও এরই মধ্যে অনেক মাদ্রাসা দুর্বৃত্ত সংগঠন আরসার নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি করেছে সূত্রটি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে এবিপিএন-৮ এর অধিনায়ক (এসপি) শিহাব কায়সার খান জানান, যেসব বিষয়গুলো উঠে এসেছে সেসব গুরুত্ব সহকারে খোঁজ নেয়া হচ্ছে। অপরাধি রোহিঙ্গাদের কেউ আশ্রয় দিচ্ছে এমন প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। শুক্রবারের ঘটনার সাথে মুহিবুল্লাহ হত্যার যোগসূত্র আছে কি না তা অধিকতর তদন্তের বিষয়।
ক্যাম্পে কর্মরত ১৪ এপিবিএন অধিনায়ক এসপি নাইমুল হক জানান, ক্যাম্পে রোহিঙ্গারা অপরাধের সাথে যুক্ত হচ্ছে এটা সঠিক। কিন্তু ক্যাম্পে কোনো দুর্বৃত্ত সংগঠনের অস্তিত্ব নেই। যদিও নানা সংগঠনের নামে এরা অপকর্ম চালানোর চেষ্টা করে তারা, সেটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। আমরা সবকিছু নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি।
Source Newsg24
নিউজজি/এসএম