ধর্ষণে অভিযুক্তরা ওই নারীর পূর্বপরিচিত : পুলিশ।

 

ধর্ষণে অভিযুক্তরা ওই নারীর পূর্বপরিচিত : পুলিশ।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান

ঢাকা থেকে সপরিবারে কক্সবাজারে বেড়াতে এসে গণধর্ষণের শিকার ওই নারীর সঙ্গে অভিযুক্তদের আগে থেকেই পরিচয় ছিল বলে জানিয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান। 


তিনি বলেন, ধর্ষণের শিকার ওই নারী পর্যটক গত দুই মাসে তিনবার কক্সবাজার এসেছেন। ধর্ষণে অভিযুক্তরা তার পূর্বপরিচিত। ওই নারী ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে সেবা পাননি বলে যে অভিযোগ করেছেন তা মিথ্যা বলেও দাবি করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। 




শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক জরুরি বৈঠক শেষে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। 


এ সময় কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তরা ওই নারীর পূর্বপরিচিত। তাদের মধ্যে কী নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল, অন্য কোনো বিষয় ছিল কিনা তা পুলিশ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করছে। তবে আজ ধর্ষণের শিকার হাওয়া নারীর ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। 

তিনি আরও বলেন, ঢাকার যাত্রাবাড়ীর জুরাইন এলাকায় থাকার কথা বললেও ওই দম্পতি তাদের সন্তানসহ তিন মাস ধরে কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেলে থাকছিলেন। তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নাম ব্যবহার করতেন। ওই নারী পুলিশের কাছে বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলেও দাবি করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। 


গত বুধবার (২২ ডিসেম্বর) স্বামী-সন্তানকে জিম্মি ও হত্যার ভয় দেখিয়ে ওই নারীকে দুই বার ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ পেয়ে রাত দেড়টার দিকে কক্সবাজারের কলাতলীর ‘জিয়া গেস্ট ইন’ নামে একটি হোটেল থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে র‌্যাব-১৫। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে হোটেলের ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত তিনজনের মধ্যে দুইজনকে শনাক্তও করা হয়েছে।




ওই নারীর বরাত দিয়ে র‌্যাব-১৫ কক্সবাজারের সিপিসি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান জানান, গত বুধবার সকালে ঢাকা থেকে স্বামী-সন্তানসহ কক্সবাজার বেড়াতে আসেন ওই নারী। এরপর কক্সবাজার শহরের হলিডে মোড়ের একটি হোটেলে ওঠেন। সেখান থেকে বিকেলে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে ঘুরতে যান। লাবণী পয়েন্টে অপরিচিত এক যুবকের সঙ্গে ওই নারীর স্বামীর ধাক্কা লাগে। পরে কথা কাটাকাটি হয়। এরই জেরে সন্ধ্যায় স্টেডিয়াম সংলগ্ন পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে কয়েকজন যুবক তার স্বামী ও ৮ মাসের সন্তানকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায়। অপর একটি অটোরিকশায় তিন যুবক গৃহবধূকে তুলে নেয়। পরে তারা পর্যটন গলফ মাঠের পেছনে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে।


সেখান থেকে তাকে ‘জিয়া গেস্ট ইন’ নামে একটি হোটেলে নেওয়া হয়। সেখানেও তাকে আরেক দফা ধর্ষণ করে ওই যুবকরা। ঘটনা কাউকে জানালে সন্তান ও স্বামীকে হত্যা করা হবে জানিয়ে হোটেল কক্ষটি বাইরে থেকে বন্ধ করে পালিয়ে যায় তারা।

ওই নারীর দাবি, তিনি জিয়া গেস্ট ইনের তৃতীয় তলার জানালা দিয়ে এক যুবকের সহায়তায় কক্ষের দরজা খুলে ৯৯৯-এ ফোন দেন। পুলিশ তাকে থানায় এসে সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দেয়। তারপর অপর এক ব্যক্তির সহযোগিতায় কল দেন র‌্যাবকে। পরে র‌্যাব এসে তাকে উদ্ধার করে। পর্যটন গলফ মাঠের এলাকা থেকে তার স্বামী ও সন্তানকেও উদ্ধার করা হয়।


এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে ওই নারীর স্বামী বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেন। কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকার আশিকুল ইসলাম আশিকসহ এজাহারে চারজনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া তিনজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- আশিকের দুই সহযোগী ইস্রাফিল খুদা ওরফে জয় ও মেহেদী হাসান ওরফে বাবু এবং হোটেলের ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন ছোটন। 


আরএআর / Dhakapost / 

Post a Comment

Previous Post Next Post

نموذج الاتصال