‘নারী পুরুষের তুলনায় দুর্বল’ কক্সবাজারে এই চিরাচরিত মানসিকতাই কাজ করেছে
সংবিধান অনুযায়ী একজন নারী একজন পুরুষের মতোই অধিকার রাখে। সুতরাং নারীদের স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরায় এবং অন্যদের সঙ্গে মেলামেশায় এরকম বিধিনিষেধ দেওয়া নারী অধিকার লঙ্ঘন এবং সাংবিধানিক অধিকারের একটা ভুল ব্যাখ্যাকেই নির্দেশ করে বলে আমি মনে করি।
কক্সবাজারে নারী ও শিশুর জন্য আলাদা জোনটি উদ্ভোধনের পর থেকেই এ বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে বয়ে গেছে সমালোচনার বন্যা। ফলে উদ্বোধনের দশ ঘণ্টার মাথায় প্রশাসনকে সিদ্ধান্তটি থেকে সরে আসতে হয়েছে।
জোনটিকে বাতিল ঘোষণা করলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ আমাদের জন্য সত্যিই ভীতিকর।
কক্সবাজারে নারীরা নিরাপত্তা হারিয়েছে এ কথা ঠিক। কিন্তু তাই বলে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে, উল্টো তাদের সীমানা বেঁধে দেওয়া চেষ্টা কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত হতে পারে না।
প্রশাসনের উচিত নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা, নারীদের দুর্বলভাবে উপস্থাপন করা নয়।
সংবিধান অনুযায়ী একজন নারী একজন পুরুষের মতোই অধিকার রাখে। সুতরাং নারীদের স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরায় এবং অন্যদের সঙ্গে মেলামেশায় এরকম বিধিনিষেধ দেওয়া নারী অধিকার লঙ্ঘন এবং সাংবিধানিক অধিকারের একটা ভুল ব্যাখ্যাকেই নির্দেশ করে বলে আমি মনে করি।
আর এই সিদ্ধান্তের পেছনে 'নারী পুরুষের তুলনায় দুর্বল'—এই চিরাচরিত মানসিকতাই কাজ করছে।
একই মানসিকতার প্রতিফলন আমরা দেখেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলগুলোর ক্ষেত্রেও। ছাত্রীদের হলে এমন কিছু নিয়ম ছিল যা কখনো ছাত্রদের হলের জন্য প্রযোজ্য হয়নি। এরমধ্যে একটি ছিল হলের সান্ধ্য আইন। ছেলেদের ক্ষেত্রে কিন্তু এই আইন প্রচলিত ছিল না। সেটাও ওই একই মানসিকতারই প্রতিফলন। তবে ইতিবাচক দিক হলো, ছাত্রীদের প্রবল প্রতিবাদের মুখে এই আইন বাতিল হয়েছে।