অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারালেন ইমরান খান।
শনিবার (০৯ এপ্রিল) দিনগত মধ্যরাতে স্পিকারের পদত্যাগের পর প্যানেল স্পিকার পাকিস্তান মুসলিম লিগের- পিএমএল (নওয়াজ) নেতা আয়াজ সাদিক পরিচালনা করেন অনাস্থা ভোট। এতে জাতীয় পরিষদের ৩৪২ ভোটের মধ্যে ১৭৪ ভোট অনাস্থা ভোটের পক্ষে পড়ে বলে ঘোষণা দেন আয়াজ।
নির্বাচনে সময় অনেক আলোচনার জন্ম দিয়ে ক্ষমতায় বসেছিলেন পাক ক্রিকেট টিমের সাবেক এই অধিনায়ক। দু’দিন আগেই বলেছিলেন শেষ বল অব্দি খেলে যাবেন। কিন্তু শেষ বলে আর রক্ষা হলো না।
পাকিস্তান মুসলিম লিগের মুখপাত্র মরিয়ম আওরঙ্গজেব বলেন, অধিবেশন পরিচালনা করায় আয়াজ তার ভোট দেননি। এছাড়া ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের ‘ভিন্নমত’ ভোট গ্রহণেরও প্রয়োজন পড়েনি।
ফলাফল ঘোষণার পর আয়াজ শেহবাজ শরীফের হাতে ফ্লোর ছেড়ে দেন, যিনি প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য বিরোধী দলীয় প্রার্থী।
অনাস্থা ভোট শুরু হওয়ার কয়েক মিনিট আগে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনায় পদত্যাগ করেন পাকিস্তানের পার্লামেন্টের স্পিকার আসাদ কায়সার ও ডেপুটি স্পিকার কাশিম সুরি। ফলে অনাস্থা ভোট পরিচালনার দায়িত্ব পড়ে প্যানেল স্পিকার পিএমএল (এন) নেতা আয়াজ সাদিকের ওপর।
অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারালেন ইমরান খান।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী শনিবার (০৯ এপ্রিল) মধ্যরাত ১২টায় শেষ হয় ইমরান খানের ওপর আনাস্থা ভোটগ্রহণের সময়। কায়সার শনিবার সকাল থেকে পার্লামেন্টের অধিবেশনটি পরিচালনা করছিলেন। তবে সেটি প্রথমে ইমরান ও তার মন্ত্রীদের অনুপস্থিতির কারণে মুলতবী করা হয়। পরে ইফতার ও এশার নামাজের কারণে ফের মুলতবী করা হয়।
এরপর পাক প্রধানমন্ত্রী বাসভবনের নিয়ন্ত্রণ নেয় পাক আর্মির ত্রিপল ওয়ান ইনফন্ট্রি ব্রিগেড। আকাশে ওড়ানো হয় সামরিক হেলিকপ্টার। উচ্চ সতর্ক অবস্থান নিতে বলা হয় পাকি সেনাদেরও। আবার ইসলামাবাদের সড়কে নামানো হয় ছয়টি ট্যাংক।
এ অবস্থার মধ্যে প্রধান বিচারপতি মধ্যরাতেও আদালত খোলা রাখার নির্দেশনা দেন। বলেন, অনাস্থা ভোটগ্রহণ না হলে সেটা হবে আদালত অবমাননা।
শেষমেষ পদত্যাগী স্পিকার কায়সার বলেন, আমি সংবিধানের কাছে দায়বদ্ধ। এবং পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষায় আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমি আর এই পদে থাকতে পারি না। তাই পদত্যাগ করছি। সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ) নেতা আয়াজ সাদিক তার আসনে বসতে বলেন এবং অনাস্থা ভোট গ্রহণের আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা বলেন। পরে রাত ১২টার পরপর তিনি অনাস্থা ভোটগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করেন।
গত রোববার ইমরানের ওপর আনা অনাস্থা প্রস্তাবকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে তা বাতিল করেছিলেন পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি। এরপর পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইমরান খানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তার আইন সভা ভেঙে দিয়েছিলেন। কিন্তু দেশটির সুপ্রিম কোর্ট সেই সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে আইনসভাকে পুনরুজ্জীবিত করার রায় দেন এবং একই সঙ্গে শনিবার (০৯ এপ্রিল) অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোট গ্রহণের দিন নির্ধারণ করে দেন।
সেই নির্দেশনা অনুযায়ী অধিবেশন বসলেও তা নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে মুলতবী করা হয়। পরবর্তীতে প্রধান বিচারপতি ও আর্মির চাপে পড়ে অনাস্থা ভোটেই যেতে হয় ইমরান খানকে।
Shehbaz Sharif
নওয়াজ ভ্রাতা শেহবাজ হচ্ছেন পাক প্রধানমন্ত্রী।
পাকিস্তানের ক্রিকেটের সাবেক অধিনায়ক অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রিত্ব খোয়ানোয় পদটিতে আসীন হতে চলেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই শেহবাজ শরিফ। তিনি পাকিস্তান পার্লামেন্টের বিরোধী জোটের নেতা ও পাকিস্তান মুসলিম লীগ-পিএমএল (এন) সভাপতি।
শনিবার (০৯ এপ্রিল) দিনগত গভীর রাত অর্থাৎ ১০ এপ্রিল ইমরান খানের ওপর আনা অনাস্থা ভোটে জিতে যায় পিএমএল (এন) নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট। স্পিকারের পদত্যাগের পর প্যানেল স্পিকার পিএমএল (এন) নেতা আয়াজ সাদিক পরিচালনা করেন পুরো প্রক্রিয়া। এতে জাতীয় পরিষদের ৩৪২ ভোটের মধ্যে ১৭৪টি ভোট, অনাস্থা ভোটের পক্ষে পড়ে বলে ঘোষণা দেন আয়াজ।
পাকিস্তান মুসলিম লিগের (এন) মুখপাত্র মরিয়ম আওরঙ্গজেব বলেন, অধিবেশন পরিচালনা করায় আয়াজ তার ভোট দেননি। এছাড়া ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের ‘ভিন্নমত’ ভোট গ্রহণেরও প্রয়োজন পড়েনি।
ফলাফল ঘোষণার পর আয়াজ শেহবাজ শরীফের হাতে ফ্লোর ছেড়ে দেন, যিনি প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য বিরোধী জোটের প্রার্থী।
অনাস্থা ভোট শুরু হওয়ার কয়েক মিনিট পূর্বে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনায় পদত্যাগ করেন পাকিস্তানের পার্লামেন্টের স্পিকার আসাদ কায়সার ও ডেপুটি স্পিকার কাশিম সুরি। ফলে অনাস্থা ভোট পরিচালনার দায়িত্ব পড়ে প্যানেল স্পিকার পিএমএল (এন) নেতা আয়াজ সাদিকের ওপর।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী, শনিবার (০৯ এপ্রিল) মধ্যরাত ১২টায় শেষ হয় ইমরান খানের ওপর অনাস্থা ভোটগ্রহণের সময়। কায়সার শনিবার সকাল থেকে পার্লামেন্টের অধিবেশনটি পরিচালনা করছিলেন। তবে সেটি প্রথমে ইমরান ও তার মন্ত্রীদের অনুপস্থিতির কারণে মুলতবী করা হয়। পরে ইফতার ও এশার নামাজের কারণে ফের মুলতবী করা হয়।
এরপর পাক প্রধানমন্ত্রী বাসভবনের নিয়ন্ত্রণ নেয় পাক আর্মির ত্রিপল ওয়ান ইনফন্ট্রি ব্রিগেড। আকাশে ওড়ানো হয় সামরিক হেলিকপ্টার। উচ্চ সতর্ক অবস্থান নিতে বলা হয় পাকি সেনাদেরও। আবার ইসলামাবাদের সড়কে নামানো হয় ছয়টি ট্যাংক।
এই অবস্থার মধ্যে প্রধান বিচারপতি মধ্যরাতেও আদালত খোলা রাখার নির্দেশনা দেন। বলেন, অনাস্থা ভোট গ্রহণ না হলে সেটা হবে আদালত অবমাননা।
নওয়াজ ভ্রাতা শেহবাজ হচ্ছেন পাক প্রধানমন্ত্রী।
শেষমেষ পদত্যাগী স্পিকার কায়সার বলেন, আমি সংবিধানের কাছে দায়বদ্ধ। এবং পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষায় আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমি আর এই পদে থাকতে পারি না। তাই পদত্যাগ করছি। সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি পাকিস্তান মুসলিম লিগ (এন) নেতা আয়াজ সাদিককে তার আসনে বসতে বলেন এবং অনাস্থা ভোট গ্রহণের আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা বলেন। পরে রাতে ১২টার পরপর তিনি অনাস্থা ভোটগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করেন।
গত রোববার ইমরানের ওপর আনা অনাস্থা প্রস্তাবকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে তা বাতিল করেছিলেন পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি। এরপর পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইমরান খানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তার আইন সভা ভেঙে দিয়েছিলেন। কিন্তু দেশটির সুপ্রীম কোর্ট সেই সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে আইনসভাকে পুনরুজ্জীবিত করার রায় দেন এবং একই সঙ্গে শনিবার (০৯ এপ্রিল) অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোট গ্রহণের দিন নির্ধারণ করে দেন।
সেই নির্দেশনা অনুযায়ী, অধিবেশন বসলেও তা নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে মুলতবী করা হয়। পরবর্তীতে প্রধান বিচারপতি ও আর্মির চাপে পড়ে অনাস্থা ভোটেই যেতে হয় ইমরান খানকে।
শেহবাজ শরিফ:
বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শেহবাজ মূলত একজন ব্যবসায়ী। ১৯৫১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর এক কাশ্মিরি পরিবারে লাহোরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মোহাম্মদ শরিফ। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছোট। লাহোর ইউনিভার্সিটি কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। এরপরই তিনি পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইত্তেফাক গ্রুপে যোগদান করেন। ১৯৮৫ সালে লাহোর চেম্বার অব চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
প্রায় একই সময় তিনি রাজনীতিতে আসেন। মোট তিনবার নির্বাচিত হন পাঞ্জাবের মূখ্যমন্ত্রীর আসনে। আসেন জাতীয় রাজনীতিতেও।
বড় ভাই নওয়াজ শরিফ দু্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে লন্ডনে চলে গেলে পিএমএল(এন) পরিচালনার দায়িত্ব নেন তিনি। কিন্তু ১৯৯৯ সালে পারভেজ মুশারফ অভ্যূত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসলে স্বেচ্ছায় সপরিবারের সৌদি চলে যান শেহবাজ। ২০০৭ সালে দেশে ফিরে দ্বিতীয়বারের মতো পাঞ্জাবের মূখ্যমন্ত্রী হন। এরপর ২০১৩ সালেও তিনি পাঞ্জাবের মূখ্যমন্ত্রী হন।