রিয়াদে আনন্দ উৎসবে জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপিত
সৌদি আরবের রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে আনন্দ উৎসবে নানা আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে গতকাল দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু চত্বরে রিয়াদস্থ বাংলাদেশ ইন্টারন্যশনাল স্কুল জাতীয় কারিকুলাম ও ইংরেজি সেকশনের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে স্কুলের শিক্ষার্থী সুবহা আজাদ, মুনতাহা আলমগীর, মাহাদিয়া মানহা ও ইসরাত জাহান।
এ সময় দূতাবাসের চার্জ দ্যা এফেয়ার্স মোঃ আবুল হাসান মৃধা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন শোষিত মানুষের নেতা, বাংলার মুক্তিসংগ্রামের মহানায়ক। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হত না, বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। ইতিহাসের মহানায়ক, বাঙালি জাতির মহান মুক্তিদাতা মহান পুরুষ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন আজ।
আবুল হাসান মৃধা বলেন, পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকেই বাঙালি জাতি বৈষম্য, প্রতারণা আর নির্যাতনের যাতাকলে পিষ্ঠ হয়ে আসছিল। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান রাষ্ট্রের শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে বরাবরই রুখে দাঁড়িয়েছেন। ভাষা আন্দোলন, যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬৬ এর ছয় দফা, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান ও ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ধারাবাহিকতায়, বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তাঁর বজ্রকন্ঠে ঘোষণা করেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’’। জাতির পিতার স্বাধীনতা ঘোষণার ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় আমাদের চূড়ান্ত বিজয়। হাজার বছরের পরাধীনতার নাগপাশ ছিন্ন করে বিশ্বের মানচিত্রে স্থান করে নেয় বাংলাদেশ নামক নতুন এক রাষ্ট্র।
চার্জ দ্যা এফেয়ার্স বলেন, দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) এর নির্দেশে রিয়াদস্থ বাংলাদেশি শিশু কিশোরদের নিয়ে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়েছে। যাতে প্রবাসে বেড়ে ওঠা এ সকল শিশু কিশোরেরা বাংলাদেশের ইতিহাস, জাতির পিতার সংগ্রামী জীবন, দেশের প্রতি তাঁর ত্যাগ ও অপরিসীম ভালোবাসা সম্পর্কে জানতে পারে। তিনি এ সময় সকল শিশু কিশোরদের শুভেচ্ছা জানান।
আবুল হাসান মৃধা নতুন প্রজন্মের শিশু কিশোরদের জাতির পিতার জীবনী পাঠের পরামর্শ প্রদান করেন। তিনি প্রবাসীদের ২০৪১ সালে একটি উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে এগিয়ে আসার আহাবান জানান।
আলোচনা অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম ও জাতীয় শিশু দিবস নিয়ে রিয়াদস্থ বাংলাদেশ ইন্টারন্যশনাল স্কুলের (জাতীয় কারিকুলাম ও ইংরেজি সেকশন) শিক্ষার্থী ফাহমিদা আক্তার, মুশফিয়া আক্তার, রাফা জায়ান ও এহসানুল রাফিদ আদিব বক্তব্য প্রদান করে। এসময় দিবসটি উপলক্ষ্যে আয়োজিত কবিতা আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন, উপস্থিত বক্তৃতা ও কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন দূতাবাসের ডিফেন্স এ্যটাশে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ গোলাম ফারুক, ইকনমিক মিনিস্টার মুর্তুজা জুলকার নাঈন নোমান ও চার্জ দ্যা এফেয়ার্স আবুল হাসান মৃধা।
পরে অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া শিশু কিশোরদের নিয়ে জাতির পিতার ১০৩ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে একটি কেক কাটা হয়। এসময় জাতির পিতার জীবনের ওপর নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। রিয়াদস্থ দুটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন শিক্ষার্থী নুর ই জান্নাত ও তাহিয়া জামান।
এর আগে আজ সকালে দিবসটি উপলক্ষ্যে দূতাবাস প্রাঙ্গণে পতাকা উত্তোলন করেন চার্জ দ্যা এফেয়ার্স মোঃ আবুল হাসান মৃধা।
এরপর জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তিনি। এসময় দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া রিয়াদের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন ও জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।
Source /